পেট কেটে বের করা হল ১০৯টি ডিম!

নিজস্ব প্রতিবেদক •

এবার পেটে ১০৯টি ডিম নিয়ে কক্সবাজার সৈকতে ভেসে এলো মৃত সামুদ্রিক কাছিম।

গতকাল বুধবার রাতে কক্সবাজার শহরের সুগন্ধা পয়েন্ট সমুদ্র সৈকতে মা কাছিমটির মৃতদেহ ভেসে আসার পর আজ বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সেটি সংগ্রহ করে ময়নাতদন্ত করেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা।

তাদের ধারণা, কাছিমটি কক্সবাজার সৈকতে ডিম পাড়তে আসার পথে সাগরে জেলেদের জালে আটকা পড়ে বা অন্য কোনো দুর্ঘটনায় মারা গেছে।

বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউট(বোরি)-এর মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ও সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর জানান, বুধবার রাতে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে একটি মৃত কচ্ছপ ভেসে আসার খবর পেয়ে বোরি’র সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটির একদল বিজ্ঞানী আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সেটি উদ্ধার করেন এবং এর মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ে ময়নাতদন্ত করেন।

তিনি জানান, প্রায় ৩০ কেজি ওজনের মা কচ্ছপটির দৈর্ঘ্য ৩ ফুট ৩ ইঞ্চি ও প্রস্থ ২ ফুট ৩ ইঞ্চি। এটির বয়স আনুমানিক ৪০ বছর। পেটে ১০৯টি ডিম ছিল। ময়নাতদন্ত শেষে কচ্ছপটির দেহ ও ডিম গবেষণার জন্যে বোরি’র ল্যাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বোরি’র সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, “কাছিমটি কয়েক দিন আগে কক্সবাজার সৈকতে ডিম পাড়তে আসার পথে সাগরে জেলেদের জালে আটকা পড়ে বা অন্য কোনো দুর্ঘটনায় মারা যায় এবং এরপর অমাবস্যার জোয়ারে সৈকতে ভেসে এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।”

কক্সবাজার সৈকত থেকে উদ্ধার মৃত কাছিমটির ময়নাতদন্ত শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করছেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, “অলিভ রিডলি বা জলপাই রঙা জাতের সামুদ্রিক কাছিমটির একটি পা ও মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ জখমপ্রাপ্ত ছিল। শরীর থেকে ডিমগুলো এমনিই বেরিয়ে আসছিল। আগেই বেশ কিছু ডিম বের হয়ে যায়।”

এর আগে গত ৯ ফেব্রæয়ারি ইনানী সৈকতের শফির বিল এলাকায় একটি সামুদ্রিক কাছিম এবং ইরাবতী ডলফিন ও কচ্ছপ উদ্ধার করা হয়েছিল। এ নিয়ে গত তিন মাসে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে অন্তত ৩০টি সামুদ্রিক কচ্ছপ মারা পড়েছে।

বোরি’র মহাপরিচালক সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর বলেন, “সৈকতে ডিম পাড়ার জন্য অসংখ্য মূল্যবান প্রাণী এখন উপকূলমুখী। আর তাদের মধ্যে রয়েছে আইনীভাবে সুরক্ষিত বঙ্গোপসাগরের জীবন্ত জীবাশ্ম নামে পরিচিত রাজকাঁকড়া এবং ‘সাগরের ঝাড়ুদার’ বা দূষণ পরিষ্কারকারী হিসাবে পরিচিত সামুদ্রিক কাছিমও কিন্তু প্রজননের জন্য উপকূলে আসার পথে কক্সবাজারে প্রতিদিন বেঘোরে মারা পড়ছে কোটি কোটি টাকার রাজকাঁকড়াসহ বহু মূল্যবান সামুদ্রিক প্রাণী।”